Krishak Bandhu Status Check West Bengal 2025: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অন্যতম জনপ্রিয় প্রকল্প কৃষক বন্ধু (Krishak Bandhu Yojana) আজ রাজ্যের হাজারো কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকরা প্রতি বছর পান সরাসরি আর্থিক সহায়তা ও সুরক্ষা সুবিধা।
২০২৫ সালে সরকার আবারও এই প্রকল্পকে আরও সহজ ও প্রযুক্তিনির্ভর করেছে, যাতে কৃষকরা ঘরে বসেই তাদের “krishak bandhu status check west bengal 2025” করতে পারেন।
এই আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করব — কৃষক বন্ধু প্রকল্প কী, এর উদ্দেশ্য, যোগ্যতা, অনলাইন রেজিস্ট্রেশন, স্ট্যাটাস চেক করার পদ্ধতি, পরবর্তী কিস্তির তারিখ এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে।
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের উদ্দেশ্য
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হল পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়া এবং তাদের চাষের মৌসুমে সহায়তা করা।
অনেক সময় বীজ, সার, জমির কাজ বা বৃষ্টির কারণে কৃষকরা আর্থিক চাপে পড়েন। এই সমস্যার সমাধানেই Krishak Bandhu Yojana শুরু করা হয়।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার সরাসরি কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠায়। ফলে দালাল বা বিলম্বের সুযোগ থাকে না।
Krishak Bandhu Yojana কী?
Krishak Bandhu Scheme পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৮ সালে শুরু করে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজ্যের কৃষকদের জন্য এক অভিনব সহায়তা ব্যবস্থা গড়ে তোলেন।
এর অধীনে —
- যেসব কৃষকের জমি ১ একর বা তার বেশি, তারা বছরে ₹10,000 টাকা পান (₹5,000 করে খরিফ ও রবি মৌসুমে)।
- যাদের জমি ১ একরের কম, তারা অনুপাতে কম টাকা পান।
- কোনো কৃষক (১৮-৬০ বছর বয়সের মধ্যে) মারা গেলে, তার পরিবার পায় ₹2 লাখ টাকার মৃত্যু বেনিফিট।
এই প্রকল্পে হাজার হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছেন এবং রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতিতে এসেছে স্থিতিশীলতা।
Krishak Bandhu Scheme – সম্পূর্ণ ওভারভিউ
| বিষয় | বিস্তারিত |
|---|---|
| প্রকল্পের নাম | Krishak Bandhu (কৃষক বন্ধু) |
| রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
| শুরু করেছে | পশ্চিমবঙ্গ সরকার |
| বার্ষিক আর্থিক সহায়তা | ₹10,000 প্রতি বছর (>১ একর জমি হলে) |
| মৃত্যু বেনিফিট | ₹2,00,000 |
| উপকারভোগী | রাজ্যের কৃষক ও ভূমি মালিক |
| রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি | অনলাইন |
| অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | https://krishakbandhu.wb.gov.in/ |
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের যোগ্যতা (Eligibility Criteria)
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সুবিধা পেতে হলে নিম্নলিখিত শর্তগুলি পূরণ করতে হবে –
- আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- তিনি অবশ্যই নিবন্ধিত কৃষক বা ভূমি মালিক হতে হবে।
- মৃত্যু বেনিফিট পেতে হলে কৃষকের বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছর হতে হবে।
- আবেদন করার সময় জমির মালিকানার প্রমাণ (Land Record বা Patta) দিতে হবে।
- কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও আধার লিংক থাকা আবশ্যক।
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের প্রয়োজনীয় নথিপত্র (Documents Required)
| নথি | ব্যবহার |
|---|---|
| আধার কার্ড | পরিচয় প্রমাণ |
| ভ voter ID (EPIC) | স্ট্যাটাস চেক ও যাচাইকরণ |
| জমির কাগজ বা পট্টা | জমির মালিকানার প্রমাণ |
| ব্যাংক পাসবুক | টাকা স্থানান্তরের জন্য |
| পাসপোর্ট সাইজ ছবি | রেজিস্ট্রেশনের সময় প্রয়োজন |
| মোবাইল নম্বর | OTP ভেরিফিকেশন ও যোগাযোগের জন্য |
সব নথি সঠিক ও হালনাগাদ থাকলে আবেদন বাতিলের সম্ভাবনা থাকে না।
কৃষক বন্ধু টাকা কবে ঢুকবে 2025
Krishak Bandhu Online Registration 2025
যদি আপনি এখনো কৃষক বন্ধু প্রকল্পে রেজিস্টার না করে থাকেন, তাহলে নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করুন 👇
ধাপ ১ — অফিসিয়াল পোর্টাল খুলুন
- ব্রাউজারে যান এবং টাইপ করুন: https://krishakbandhu.wb.gov.in/
- ওয়েবসাইট লোড হলে হোমপেজে আসুন।
টিপ: মোবাইল বা পিসি যেকোনো ডিভাইসেই করা যাবে। দ্রুত লোড না হলে নেটওয়ার্ক চেক করুন।
ধাপ ২ — Farmer Registration নির্বাচন করুন
- হোমপেজে দেখুন “Farmer Registration” বা সমতুল্য লিংক।
- সেটিতে ক্লিক করুন। এটি আপনাকে রেজিস্ট্রেশন ফরমে নিয়ে যাবে।
ধাপ ৩ — ব্যক্তিগত ও জমি সংক্রান্ত তথ্য পূরণ করুন
ফরমে নিচের ক্ষেত্রগুলো সতর্কতার সঙ্গে পূরণ করুন:
- নাম (যেমন আধারে আছে)
- পিতার নাম / স্বামীর নাম (যদি ফরমে চাওয়া থাকে)
- আধার নম্বর (Aadhaar)
- ভোটার আইডি (EPIC) — যদি থাকে
- জমির বিবরণ (পট্টা/খতিয়ান নম্বর, একর ইত্যাদি)
- ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও IFSC
- মোবাইল নম্বর (যেখানে OTP যাবে)
টিপস:
- নাম/আধার/ভোটার আইডি ভুল দিলে যাচাই হতে সমস্যা হবে—একবার নিশ্চিত করে লিখুন।
- ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আপনার নামটি আধারের সাথে মিললে DBT সহজ হয়।
ধাপ ৪ — নথি স্ক্যান করে আপলোড করুন
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো স্ক্যান বা মোবাইল ফটো তুলে আপলোড করুন:
- Aadhaar Card (পরিচয়)
- Voter ID (EPIC) — যদি আছে
- জমির কাগজ / Patta / Land Record
- Bank Passbook (অ্যাকাউন্ট নেটিভিটি দেখাতে)
- Passport-size photo (চাহিদা অনুযায়ী)
ফাইল টিপস:
- সাধারণত JPG/PNG/PDF গ্রহণ করে।
- ফাইল পরিষ্কার এবং পাঠযোগ্য হতে হবে।
- প্রতিটি ফাইলের সাইজ ১–২ এমবি-র মধ্যে রাখলে ভালো (সাইট আলাদা নিয়ম বললে সেটি অনুসরণ করুন)।
- ফাইল নাম সহজে চিনতে হওয়া উচিত (উদাহরণ: aadhaar_babusona.pdf)।
ধাপ ৫ — যাচাই (OTP) ও সাবমিট
- মোবাইল নম্বরে পাঠানো OTP ভেরিফাই করুন।
- সব তথ্য চেক করে Submit বাটনে ক্লিক করুন।
- সাবমিট করার পর সাইটে একটি Acknowledgement / Reference Number দেখাবে — এটি নোট করে রাখুন বা স্ক্রিনশট নিন।
টিপ: OTP না এলে: নেটওয়ার্ক দেখুন, সঠিক নম্বর দিয়েছেন কি না চেক করুন, কিছুক্ষণের মধ্যে আবার চেষ্টা করুন।
ধাপ ৬ — আবেদন যাচাই এবং পরবর্তী করণীয়
- আপনার আবেদন স্থানীয় কৃষি দপ্তর/যুক্ত অফিস থেকে যাচাই করা হবে।
- যাচাই শেষে যদি অনুমোদিত হয়, পেমেন্ট জন্য আপনার ব্যাঙ্কে DBT করা হবে।
- অনুমোদন বা বাতিল হলে সেই তথ্য আপনার মোবাইল নম্বরে এসএমএস বা পোর্টালে দেখা যাবে।
মনে রাখবেন: যাচাই বা পেমেন্টে সময় লাগতে পারে—প্রশাসনিক প্রক্রিয়া অনুসারে পরিবর্তন হয়।
Krishak Bandhu Status Check West Bengal 2025
অনেক কৃষক জানতে চান — “আমার আবেদন অনুমোদিত হয়েছে কিনা?” বা “টাকা জমা পড়েছে কি?”
এই প্রশ্নের উত্তর আপনি অনলাইনে সহজেই জানতে পারবেন।
নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করুন 👇
Voter ID দিয়ে স্ট্যাটাস চেক করার পদ্ধতি:
- যান অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে – https://krishakbandhu.wb.gov.in/
- “Krishak Bandhu Status Check” অপশনে ক্লিক করুন।
- ‘Search by Voter ID’ নির্বাচন করুন।
- আপনার EPIC Number (Voter ID) লিখুন।
- “Submit” বাটনে ক্লিক করুন।
এখন আপনি দেখতে পাবেন –
- আপনার আবেদন অনুমোদনের অবস্থা,
- পেমেন্টের বর্তমান স্ট্যাটাস,
- সর্বশেষ কিস্তির তারিখ ও পরিমাণ।
Krishak Bandhu Payment Status 2025
অনলাইন পোর্টালে গিয়ে আপনি জানতে পারবেন আপনার টাকার অবস্থা।
চেক করার ধাপ:
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট খুলুন।
- “Check Payment Status” এ ক্লিক করুন।
- আপনার Aadhaar Number বা Voter ID দিন।
- “Search” চাপুন।
স্ক্রিনে দেখা যাবে –
- আপনার সাম্প্রতিক কিস্তির তারিখ,
- টাকা জমা হয়েছে কিনা,
- আপনার ব্যাংক ট্রান্সফারের অবস্থা।
Krishak Bandhu Beneficiary List 2025
যেসব কৃষকের আবেদন অনুমোদিত হয়েছে, তাদের নাম থাকে Beneficiary List-এ।
এই লিস্ট অনলাইনে দেখতে পারেন –
ধাপ:
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
- “Beneficiary List” বা “Know Your Status” এ ক্লিক করুন।
- আপনার District → Block → Village নির্বাচন করুন।
- নাম বা ভোটার আইডি দিয়ে সার্চ করুন।
লিস্টটি নিয়মিতভাবে আপডেট হয়, বিশেষ করে নতুন কিস্তি দেওয়ার আগে।
Krishak Bandhu Next Installment Date 2025
প্রতি বছর কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকা দুই কিস্তিতে দেওয়া হয় —
| মৌসুম | কিস্তি প্রদানের সময় |
|---|---|
| খরিফ মৌসুম | জুন – জুলাই |
| রবি মৌসুম | নভেম্বর – ডিসেম্বর |
২০২৫ সালের পরবর্তী কিস্তি জুলাই মাসে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে প্রশাসনিক কারণে সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। তাই নিয়মিত অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে স্ট্যাটাস চেক করুন।
Krishak Bandhu Scheme-এর প্রধান সুবিধা
- সরাসরি ব্যাংক ট্রান্সফার (DBT): টাকা সরাসরি কৃষকের অ্যাকাউন্টে যায়, কোনো দালাল ছাড়াই।
- বার্ষিক ₹10,000 সহায়তা: ১ একর বা তার বেশি জমির কৃষকরা বছরে ₹10,000 পান।
- মৃত্যু বেনিফিট: কৃষকের অকাল মৃত্যু হলে পরিবার ₹2 লাখ পায়।
- প্রো-রাটা সুবিধা: ১ একরের কম জমির কৃষকও অনুপাতে টাকা পান।
- সহজ অনলাইন স্ট্যাটাস চেক: ঘরে বসেই আবেদন ও পেমেন্টের অবস্থা জানা যায়।
- অর্থনৈতিক স্থিতি: কৃষকদের আর্থিক চাপ কমিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি ঘটায়।
West Bengal Krishak Bandhu ID Number Check
আপনার আবেদন বা পেমেন্ট ট্র্যাক করতে চাইলে Krishak Bandhu ID খুব গুরুত্বপূর্ণ।
চেক করার জন্য –
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
- “Know Your Status” এ ক্লিক করুন।
- আপনার Voter ID বা Aadhaar Number দিন।
- আপনার Krishak Bandhu ID দেখতে পাবেন।
এই আইডি দিয়ে ভবিষ্যতে আপনি সহজেই আপনার পেমেন্ট স্ট্যাটাস ও অন্যান্য তথ্য জানতে পারবেন।
কৃষক বন্ধু প্রকল্প কেন গুরুত্বপূর্ণ
কৃষক বন্ধু প্রকল্প শুধুমাত্র একটি আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি নয়, এটি রাজ্যের কৃষকদের জন্য একটি নিরাপত্তা ছাতা।
চাষের সময় বা দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে পরিবার যাতে আর্থিকভাবে বিপদে না পড়ে, সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ।
এর মাধ্যমে রাজ্যের কৃষকরা আত্মনির্ভর হচ্ছেন, কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়ছে এবং গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে।
উপসংহার
“krishak bandhu status check west bengal 2025” হলো সেই গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন টুল, যার মাধ্যমে আপনি জানতে পারেন আপনার কৃষক বন্ধু টাকার বর্তমান অবস্থা।
মাত্র কয়েকটি ক্লিকেই আপনি দেখতে পারেন — আপনার আবেদন অনুমোদিত হয়েছে কিনা, টাকা কখন জমা পড়েছে, এবং পরবর্তী কিস্তি কবে পাবেন।
এই প্রকল্পে অংশ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের কৃষকরা শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, পাচ্ছেন এক নতুন আত্মবিশ্বাস।
তাই দেরি না করে এখনই অফিসিয়াল পোর্টালে গিয়ে নিজের Krishak Bandhu Status Check করে নিন!