West Bengal SIR Documents List নিয়ে বড় ঘোষণা! কমিশনার জানালেন, এই ১১টি নথি ছাড়া কাজ হবে না – জেনে নিন সম্পূর্ণ তালিকা ও নিয়ম

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

West Bengal SIR Documents List: পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে SIR (State Identification Register) বা রাজ্য নাগরিক পরিচয় যাচাই প্রক্রিয়া নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। অনেকেই জানেন না ঠিক কোন কোন নথি লাগবে, কারা জমা দেবেন, আবার কারা দিতে হবে না।
সম্প্রতি কমিশনারের দফতর থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে যেখানে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে West Bengal SIR Documents List অনুযায়ী ১১টি নির্দিষ্ট নথির মধ্যে যেকোনো একটি নথি জমা দিলেই নাগরিকত্ব যাচাইয়ের কাজ সম্পূর্ণ হবে।

তবে যাদের নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে রয়েছে, তাদের এই ১১টি নথি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র যাদের ২০০২ সালের পর বয়স ১৮ বছর হয়েছে এবং ভোটার কার্ডে নাম তুলেছেন, তাদেরকেই এই ১১টি নথির মধ্যে একটি জমা দিতে হবে।


West Bengal SIR Documents List কী?

SIR বা State Identification Register হলো এক ধরনের প্রশাসনিক যাচাই প্রক্রিয়া, যেখানে নাগরিকদের পরিচয় এবং নাগরিকত্ব যাচাই করা হয়।
কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকার এই নথিগুলির মাধ্যমে নিশ্চিত হয় যে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভারতীয় নাগরিক এবং আইন অনুযায়ী সমস্ত নথি সঠিক আছে।


West Bengal SIR Documents List (কমিশনারের নির্দেশিত ১১টি নথি)

কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী নিচের ১১টি নথির যেকোনো একটি থাকলেই পরিচয়পত্র হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে—

নথির নামবর্ণনা
জন্ম সনদপত্র (Birth Certificate)সরকার অনুমোদিত জন্ম রেজিস্ট্রার অফিস থেকে প্রাপ্ত জন্মের সরকারি প্রমাণ।
পাসপোর্ট (Passport)কেন্দ্রীয় সরকারের স্বীকৃত আন্তর্জাতিক পরিচয়পত্র যা নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবেও গৃহীত হবে।
মাধ্যমিক বা তার উপরের কোনো শিক্ষাগত সনদপত্রমাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের কোনো সনদপত্রও প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য।
রাষ্ট্র সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদিত বাসস্থানের শংসাপত্রসরকারি আবাসন দপ্তর থেকে প্রাপ্ত বা কোনো সরকারি প্রকল্পের বাসস্থান অনুমোদনের নথি।
ফরেস্ট রাইট সার্টিফিকেট (Forest Right Certificate)যারা বনভূমিতে বসবাস করেন, তাদের জমির অধিকার প্রমাণপত্র।
জাতীয় শংসাপত্র (Nationality Certificate)স্থানীয় প্রশাসন বা আদালত কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকত্বের শংসাপত্র।
কোনো নাগরিকের নামাঙ্কিত রেজিস্টার বা স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া পারিবারিক রেজিস্টারপঞ্চায়েত বা পৌর প্রশাসনের সংরক্ষিত নাগরিক রেকর্ড।
জমি বা বাড়ির দলিল (Land/House Deed)জমি বা বাড়ি ক্রয়ের বৈধ দলিল যা বাসস্থানের স্থায়িত্ব প্রমাণ করে।
ব্যাংক, পোস্ট অফিস বা অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের নথি (Before July 1987)১৯৮৭ সালের জুলাই মাসের আগে ব্যাংক বা সরকারি দপ্তরে প্রদত্ত কোনো প্রমাণপত্র।
সরকারি কর্মচারী হিসেবে কাজের প্রমাণপত্রকেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের অধীনে কর্মরত ব্যক্তির অফিসিয়াল সার্ভিস রেকর্ড।
পেনশন প্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীর প্রমাণপত্রপেনশন পেয়ে থাকলে তার প্রমাণপত্রও গ্রহণযোগ্য।

কাদের এই ১১টি নথি জমা দিতে হবে?

কমিশনারের স্পষ্ট নির্দেশ অনুযায়ী, সব নাগরিককে এই নথি জমা দিতে হবে না।
এখানে দুইটি শ্রেণি তৈরি করা হয়েছে —

🟢 যাদের এই নথি জমা দিতে হবে না:
  • যাদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় (Voter List) রয়েছে,
    তাদেরকে এই ১১টি নথি জমা করতে হবে না।
  • অর্থাৎ যারা ২০০২ সালের আগেই প্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছর) হয়েছেন, তাদের জন্য আলাদা কোনো নথি চাওয়া হবে না।
🔴 যাদের এই নথি জমা দিতে হবে:
  • যাদের ২০০২ সালের পর ১৮ বছর বয়স হয়েছে,
    অর্থাৎ যারা পরে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন,
    তাদেরকেই এই ১১টি নথির মধ্যে যেকোনো একটি জমা দিতে হবে।

West Bengal SIR গুরুত্বপূর্ণ তারিখ


অনলাইনে ভোটার লিস্ট ডাউনলোড করার পদ্ধতি (CEO West Bengal অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে)

যাদের নাম ২০০২ সালের ভোটার লিস্টে আছে, তারা নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করে সহজেই ভোটার লিস্ট ডাউনলোড করতে পারবেন —

  1. 🔗 প্রথমে যান অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে — https://ceowestbengal.wb.gov.in
  2. 🖱️ “Voter List” বা “Final Roll” অপশনে ক্লিক করুন।
  3. 📍 নিজের জেলা (District) নির্বাচন করুন।
  4. 🏙️ নিজের Assembly Constituency (AC) সিলেক্ট করুন।
  5. 🏠 তারপর Polling Station বা Booth Name নির্বাচন করুন।
  6. 🔍 এরপর “View Voter List” এ ক্লিক করুন।
  7. 📄 আপনার নাম খুঁজে নিয়ে সেই পেজটি PDF আকারে ডাউনলোড করুন।
  8. 🖨️ PDF টি প্রিন্ট করে SIR যাচাইয়ের সময় জমা দিন।

২০০২ সালের ভোটার লিস্ট পশ্চিমবঙ্গের


গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ

কমিশনের মতে, আধার কার্ড নাগরিকত্ব প্রমাণের নথি নয়। যদিও এটি পরিচয়পত্র হিসেবে দেখানো যেতে পারে, কিন্তু এটি একা নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসাবে গ্রহণযোগ্য হবে না।

অর্থাৎ, যদি কেউ শুধুমাত্র আধার কার্ড জমা দেন, তবে তা SIR যাচাইয়ের জন্য যথেষ্ট হবে না। তার সঙ্গে উপরের ১১টি নথির মধ্যে যেকোনো একটি নথি দিতে হবে।

এই ১১টি নথির যেকোনো একটিও না থাকলে, নাগরিকত্ব প্রমাণে সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং আবেদন বাতিল হতে পারে।


আধার কার্ড দেখানো যাবে কি?

অনেকে ভাবছেন আধার কার্ড দেখালেই কি যথেষ্ট হবে?
কমিশনার জানিয়েছেন —
আধার কার্ডকে পরিচয়পত্র হিসেবে দেখানো যেতে পারে, কিন্তু এটি নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়
অর্থাৎ, আধার থাকলেই আপনি ভারতীয় নাগরিক — এমনটা প্রমাণ হয় না। তাই আধারের সঙ্গে উপরোক্ত ১১টি নথির মধ্যে যেকোনো একটি থাকলেই সেটি পূর্ণ প্রমাণ হিসেবে গণ্য হবে।


কেন এই নথি যাচাই করা হচ্ছে?

এই যাচাই প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো —

  1. ভোটার তালিকায় সঠিক তথ্য রাখা,
  2. অবৈধ নাগরিকদের সনাক্ত করা,
  3. এবং রাজ্যের নাগরিক ডেটাবেস সঠিকভাবে তৈরি করা

পশ্চিমবঙ্গ সরকার নাগরিকদের সুরক্ষা এবং তথ্যের স্বচ্ছতার জন্য এই প্রক্রিয়া চালু করেছে।


সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি কেন হচ্ছে?

অনেকে ভাবছেন যে, সবাইকেই এই নথি জমা দিতে হবে —
কিন্তু আসলে তা নয়।
শুধুমাত্র যারা ২০০২ সালের পর প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছেন,
তাদেরকেই এই প্রমাণপত্র দিতে হবে।
২০০২ সালের আগে ভোটার কার্ড থাকা নাগরিকদের কিছুই করতে হবে না।

তাই ঘাবড়ানোর কোনো কারণ নেই।
সরকারি যাচাইয়ের সময় প্রয়োজনীয় নথি জমা রাখলেই যথেষ্ট।


কোন নথি সহজে পাওয়া যায়?

যদি কারো জন্ম সনদ বা পাসপোর্ট না থাকে,
তাহলে নিচের নথিগুলিও ব্যবহার করা যেতে পারে:

  • মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট,
  • রেশন কার্ড,
  • বাড়ির দলিল,
  • বা রাজ্য সরকারের কোনো অফিসিয়াল সার্টিফিকেট।

এই নথিগুলির যেকোনো একটি থাকলে আর কোনো চিন্তার প্রয়োজন নেই।


নথি যাচাইয়ের সময় যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে:

  1. নথির কপি যেন স্পষ্ট এবং স্বাক্ষরিত হয়।
  2. সরকারি অফিসের সিল ও তারিখ থাকা জরুরি।
  3. পুরোনো রেকর্ড থাকলে সেটি সংরক্ষণ করে রাখুন।
  4. যাচাইয়ের সময় মূল নথি সঙ্গে রাখুন।
  5. কোনো দালালের মাধ্যমে কাজ না করে সরাসরি সরকারি অফিসে জমা দিন।

কমিশনারের বার্তা সাধারণ মানুষের জন্য

কমিশনার জানিয়েছেন, নাগরিক যাচাইয়ের পুরো প্রক্রিয়াটি মানুষের সুবিধার কথা মাথায় রেখে করা হচ্ছে। কারও উপর অযথা চাপ সৃষ্টি করা হবে না, এবং কারও নাগরিকত্ব নিয়ে ভয় পাওয়ারও দরকার নেই।

এই “west bengal sir documents list” শুধুমাত্র প্রশাসনিক যাচাইয়ের স্বচ্ছতা বাড়াতে তৈরি করা হয়েছে।
উদ্দেশ্য হলো —
✅ সঠিক নাগরিক তথ্য সংরক্ষণ
✅ ভুয়ো নাম ও জাল নথি রোধ করা
✅ সরকারি সুবিধা প্রকৃত নাগরিকের কাছে পৌঁছানো


উপসংহার

আজকের দিনে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো ভুল তথ্য দেখে আতঙ্কিত হচ্ছেন। কিন্তু কমিশনের ঘোষণায় বিষয়টি একেবারে পরিষ্কার।

👉 যাদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় আছে, তাদের কোনো চিন্তার কারণ নেই।
👉 যাদের নাম পরে উঠেছে, তাদের শুধু এই ১১টি নথির মধ্যে একটি জমা দিতে হবে।
👉 আধার কার্ড একা নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারবে না।

তাই, west bengal sir documents list ভালোভাবে পড়ে রাখুন, প্রয়োজন হলে নথি প্রস্তুত রাখুন,
আর ভুয়ো খবর বা গুজব থেকে দূরে থাকুন।

প্রশাসন সবরকম সহায়তা করবে —
সঠিক তথ্য জানতে সবসময় দেখুন:
🔗 https://ceowestbengal.wb.gov.in

Leave a comment