ছট পূজা ২০২৪ এর তারিখ এবং সময়
ছট পূজা ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় এবং প্রাচীন পূজা। এই পূজা বিশেষ করে বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, এবং পশ্চিমবঙ্গে উদযাপন করা হয়। এই উৎসবে সুর্যদেব এবং ছঠি মাইয়ের উপাসনা করা হয়। বাংলায় ছট পূজার সময়, তারিখ, ছুটি এবং ক্যালেন্ডার অনুযায়ী উৎসবের বিশদ জানতে চান অনেকেই। এখানে ছট পূজা ২০২৪ এর তারিখ এবং বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করা হলো।
Chhath Puja 2024 Date in West Bengal
ছট পূজা ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণত, দীপাবলির কয়েক দিন পর এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই বছরের ছট পূজা ৭ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।
তারিখ অনুযায়ী পূজার চার দিন:
- নহায় খায়: ৭ নভেম্বর, ২০২৪ (বৃহস্পতিবার)
- খরনা বা লোহণ্ডা: ৮ নভেম্বর, ২০২৪ (শুক্রবার)
- সাঁঝি আর্ঘ্য: ৯ নভেম্বর, ২০২৪ (শনিবার)
- ভোরের আর্ঘ্য: ১০ নভেম্বর, ২০২৪ (রবিবার)
ছট পুজোর দ্বিতীয় দিনে সূর্যদেবকে অর্ঘ্যদান ভক্তদের।#WestBengal #Kolkata #ChhathFestival #ChhathPuja2024 #ChhathParv #ChhathPuja #chhathmahaparv pic.twitter.com/laV2Fy6nOQ
— DD Bangla News (@DDBanglaNews) November 6, 2024
Chhath Puja 2024 Time in West Bengal
ছট পূজার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো সুর্যদেবকে সন্ধ্যার এবং ভোরের আর্ঘ্য প্রদান করা।
- সাঁঝি আর্ঘ্য: ৯ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে যখন সূর্য অস্ত যেতে থাকে তখন প্রথম আর্ঘ্য প্রদান করা হয়।
- ভোরের আর্ঘ্য: ১০ নভেম্বর ভোরের দিকে, সূর্যোদয়ের সময় দ্বিতীয় আর্ঘ্য প্রদান করা হয়। এই সময় হলো ভক্তদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ।
আর্ঘ্য দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়:
সাঁঝি আর্ঘ্যের জন্য ৫:০০ – ৬:০০ টা সন্ধ্যার মধ্যে প্রস্তুতি নিতে হবে।
ভোরের আর্ঘ্যের জন্য ৬:০০ – ৭:০০ টা সকাল সময়।
Chhath Puja 2024 Holiday in West Bengal
পশ্চিমবঙ্গে ছট পূজা সাধারণত বিহার ও ঝাড়খণ্ড থেকে আগত মানুষদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ন। যদিও পশ্চিমবঙ্গে ছট পূজা সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষিত হয় না, তবে অনেক প্রতিষ্ঠানে ছট পূজার সময় আংশিক বা পূর্ণ ছুটি দেওয়া হয়। সাধারণত যেসব এলাকায় বিহারি ও ঝাড়খণ্ডি মানুষদের বসবাস বেশি, সেখানে ছট পূজায় ছুটি দেওয়া হয়।
Chhath Puja Rituals
ছট পূজার চারটি মূল ধাপ রয়েছে:
- নহায় খায়: প্রথম দিন গঙ্গা নদী বা অন্য কোনো নদীর জলে পবিত্র স্নান করে নিজেকে শুদ্ধ করেন। এরপর নিরামিষ খাবার গ্রহণ করা হয়।
- খরনা বা লোহণ্ডা: দ্বিতীয় দিন উপবাস পালন করা হয়। সন্ধ্যার দিকে ভক্তরা মিষ্টি, পায়েস ইত্যাদি রান্না করে প্রসাদ নিবেদন করেন।
- সাঁঝি আর্ঘ্য: তৃতীয় দিন, ভক্তরা সূর্যাস্তের সময় আর্ঘ্য প্রদান করেন। এই সময় অনেক ভক্ত তাদের পরিবারের সঙ্গে নদীর তীরে বা জলাশয়ের ধারে সমবেত হন। তারা সূর্যদেবকে প্রদীপ, ফল এবং মিষ্টি নিবেদন করেন।
- ভোরের আর্ঘ্য: শেষ দিনে ভোরবেলা সূর্যোদয়ের সময়ে আবার আর্ঘ্য প্রদান করা হয়। এই আর্ঘ্য প্রদান করে উপবাস সমাপ্ত করা হয়।
Chhath Puja 2024 Date in West Bengal Calendar
পশ্চিমবঙ্গে ছট পূজা ২০২৪ এর তারিখটি হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে বিশেষভাবে উল্লেখিত হয়।
ক্যালেন্ডারের তারিখ অনুযায়ী:
- নহায় খায়: ৭ নভেম্বর (কার্তিক শুক্লা চতুর্থী)
- খরনা বা লোহণ্ডা: ৮ নভেম্বর (কার্তিক শুক্লা পঞ্চমী)
- সাঁঝি আর্ঘ্য: ৯ নভেম্বর (কার্তিক শুক্লা ষষ্ঠী)
- ভোরের আর্ঘ্য: ১০ নভেম্বর (কার্তিক শুক্লা সপ্তমী)
এটি ক্যালেন্ডারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে ধরা হয় এবং অনেক ভক্ত এই পূজায় অংশ নেন।
Chhath Puja Significance and History
ছট পূজার ইতিহাস অনেক প্রাচীন এবং বৈদিক যুগ থেকে শুরু হয়। এই পূজায় মূলত সুর্যদেব এবং তার শক্তির পূজা করা হয়, যা জীবনের একমাত্র উৎস হিসেবে সম্মানিত। পূরাণ মতে, ছঠি মাই বা মা শক্তি সন্তানদের রক্ষাকারী এবং সুখ সমৃদ্ধি দানকারী।
Chhath Puja Celebration in West Bengal
পশ্চিমবঙ্গে ছট পূজার উৎসব খুব সুন্দরভাবে উদযাপিত হয়। অনেক পরিবার এই পূজা উদযাপন করে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক মজবুত করে। বিশেষত, হাওড়া, কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন অঞ্চলে বড়ো আকারে ছট পূজা পালিত হয়।
অনেকেই গঙ্গা নদীর তীরে বা অন্য নদীর তীরে সমবেত হন। তারা সেখানে নানা ধরণের সাজসজ্জা, সংগীত এবং সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।
Chhath Puja and Environmental Awareness
ছট পূজা পরিবেশের প্রতি এক প্রাকৃতিক সমর্পণ। ভক্তরা নদীতে স্নান করেন এবং শুদ্ধ জলে সূর্যদেবকে আর্ঘ্য দেন। এটি প্রকৃতির প্রতি এক আধ্যাত্মিক সম্মান প্রদর্শন।
পশ্চিমবঙ্গে ছট পূজা উদযাপন করার সময় পরিবেশ সচেতনতা বিশেষ গুরুত্ব পায়। স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বেচ্ছাসেবকরা সব জায়গা পরিষ্কার রাখার উদ্যোগ নেন এবং প্লাস্টিকের ব্যবহার এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেন।
Tips for Chhath Puja Observance
- উপবাস পালন: ছট পূজার সময় উপবাস রাখা অনেক কঠিন, তাই শরীর ঠিক রাখতে ফল, সবজি এবং শুদ্ধ জল গ্রহণ করুন।
- পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন: নদীর তীরে বা পুকুরের ধারে যেখানে পূজা করা হয় সেখানে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- মানসিক প্রস্তুতি: ছট পূজার প্রধান উদ্দেশ্য হলো আত্মশুদ্ধি এবং মানসিক স্থিতি অর্জন করা। পূজার সময় একান্তে ধ্যান এবং প্রকৃতির সাথে সংযোগ স্থাপন করে পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে উপাসনা করুন।
Conclusion
ছট পূজা ২০২৪ সালে পশ্চিমবঙ্গে বৃহৎ আকারে পালিত হবে। এই উৎসবে সুর্যদেব এবং ছঠি মাইয়ের প্রতি ভক্তদের নিবেদন অত্যন্ত গভীর এবং শ্রদ্ধাশীল।