পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ভিন রাজ্যে কর্মরত পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বার্থে শ্রমশ্রী প্রকল্প ঘোষণা করেছেন।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা শ্রমিকরা অর্থনৈতিক সাহায্য, বিনামূল্যে রেশন, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডসহ বিভিন্ন সরকারি সুবিধা পাবেন।
What is Shramshree Scheme? (শ্রমশ্রী প্রকল্প কী?)
শ্রমশ্রী প্রকল্প হলো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি নতুন উদ্যোগ, যার মাধ্যমে ভিন রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
প্রতিটি শ্রমিক মাসে ৫০০০ টাকা ভাতা, বিনামূল্যে রেশন, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড, লক্ষীর ভান্ডার, উৎকর্ষ বাংলা ট্রেনিং সহ বিভিন্ন সুবিধা পাবেন।
Objective of Shramshree Scheme (উদ্দেশ্য)
- ভিন রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের পুনর্বাসন করা।
- অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রদান করা।
- দক্ষতা অনুযায়ী কাজের ব্যবস্থা করা।
- শ্রমিক পরিবারের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা।
Helpful Summary Table –Shramshree Apply Online
বিষয় | তথ্য |
---|---|
প্রকল্পের নাম | শ্রমশ্রী প্রকল্প (Shramshree Scheme) |
ঘোষণাকারী | মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি |
সুবিধা | মাসিক ৫০০০ টাকা, রেশন, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড |
বয়স সীমা | ১৮-৬০ বছর |
আবেদন পদ্ধতি | অনলাইন ও অফলাইন |
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | শীঘ্রই চালু হবে |
Eligibility Criteria – কে আবেদন করতে পারবেন?
- আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
- বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে।
- যেসব শ্রমিক ভিন রাজ্যে কাজ করতেন এবং বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে ফিরেছেন তারাই আবেদন করতে পারবেন।
Documents Required (প্রয়োজনীয় নথি):
- আধার কার্ড
- ভোটার কার্ড
- ব্যাঙ্ক পাসবুকের কপি
- মোবাইল নাম্বার
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজের প্রমাণপত্র
Benefits of Shramshree Scheme (সুবিধাসমূহ):
- মাসিক ৫০০০ টাকা ভাতা এক বছর পর্যন্ত।
- বিনামূল্যে রেশন সুবিধা।
- স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সুবিধা।
- লক্ষীর ভান্ডারসহ অন্যান্য প্রকল্পের সুবিধা।
- উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের মাধ্যমে দক্ষতা প্রশিক্ষণ।
- সন্তানের সরকারি স্কুলে ভর্তির সুযোগ।
How to Apply for Shramshree Online — স্টেপ-বাই-স্টেপ (সহজ বাংলা)
নিচে অনলাইনে শ্রমশ্রী এপ্লাই করার সম্পূর্ণ ও পরিষ্কার স্টেপ-বাই-স্টেপ গাইড দিলাম — প্রতিটি ধাপ ধাপে কী করবেন এবং কোন বিষয়ে সাবধানতা প্রয়োজন তা সহজ ভাষায় দেওয়া আছে।
Step 1 — Visit Official Website
- রাজ্য সরকারের শ্রমশ্রী পোর্টাল চালু হলে প্রথমে সেই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান।
- মেনুতে বা হোমপেজে “Shramshree Apply Online” বা সমসমস্যার বাটন দেখুন। (ওয়েবসাইট না গেলে পরে আবার চেষ্টা করুন বা স্থানীয় অফিসে জিজ্ঞাসা করুন।)
Step 2 — Click on “Shramshree Apply Online”
- ওই বাটনে ক্লিক করলে আবেদন পেজ খুলবে।
- যদি প্রথমবার হয়, Sign Up / Register অপশন দেখতে পাবেন; অন্যথায় Login করুন।
Step 3 — Registration (নতুন ব্যবহারকারী হলে)
- নাম, সক্রিয় মোবাইল নম্বর, Aadhaar নম্বর দিন।
- OTP আসবে — মোবাইলে আসা OTP ভেরিফাই করে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন।
- একটি পাসওয়ার্ড দিন (মনে রাখার মতো শক্ত) — পরবর্তীতে লগইন এ ব্যবহৃত হবে।
- রেজিস্ট্রেশন সফল হলে SMS/ইমেল আসতে পারে — সেটা সংরক্ষণ করুন।
টিপ: রেজিস্ট্রেশনে মোবাইল ভুল দিলে পরে ভেরিফিকেশনে সমস্যা হতে পারে — সঠিক নম্বরই দিন।
Step 4 — Fill the Application Form (ফর্ম পূরণ)
- লগইন করে Application Form খুলুন।
- ধাপে ধাপে ব্যক্তিগত তথ্য লিখুন: নাম, পিতার/মাতার নাম, জন্মতারিখ, স্থায়ী ঠিকানা।
- যোগাযোগের তথ্য: মোবাইল, ইমেল (যদি থাকে)।
- কর্মসংস্থান সম্পর্কিত তথ্য: কোন রাজ্যে কাজ করেছিলেন, কাজের ধরন, কতদিন কাজ করেছেন ইত্যাদি।
- ব্যাংক তথ্য দিন: ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, IFSC, ব্যাংকের শাখা—অ্যাকাউন্ট অবশ্যই আপনার নামে থাকা চাই।
- সব তথ্য সাবধানতার সঙ্গে পরীক্ষা করুন (স্পেলিং/নাম/IFSC ঠিক আছে কিনা)।
Step 5 — Upload Documents (স্ক্যান ও আপলোড)
- সাধারণত আবেদন পেজে নথি আপলোড করার অপশন থাকবে। প্রয়োজনীয় কাগজের স্ক্যান/ফটো আপলোড করুন:
- Aadhaar Card (স্ক্যান/জেপিজি/পিডিএফ)
- Voter ID (যদি থাকে)
- Bank passbook/first page showing name + account number + IFSC
- Passport-size photo (সাম্প্রতিক)
- পরিযায়ী শ্রমিকের প্রমাণ থাকলে সেটা (যদি থাকে)
- স্বাক্ষর করা Declaration (যদি ওয়েব ফর্মে চাওয়া হয়)
- ফাইল ফরম্যাট: সাধারণত PDF, JPG, PNG গ্রহণ করে। ফাইল সাইজ ছোট রাখুন — প্রায়শই 500KB–2MB ব্যবহৃত হয়। (ওয়েবসাইট নির্দিষ্ট করলে সেটাই অনুসরণ করুন)
টিপ: আপলোড করার আগে ফাইল নাম সহজ রাখুন (e.g., Aadhaar_YourName.jpg) — পরে খোঁজ সহজ হয়।
Step 6 — Review & Submit (পর্যালোচনা ও সাবমিট)
- শেষবার সব তথ্য ভালো করে চেক করুন — নাম/ব্যাংক নম্বর/মোবাইল ঠিক আছে কি না।
- যদি ঠিক থাকে Submit বাটনে ক্লিক করুন।
- সাবমিশনের পরে সাধারনত স্ক্রিনে একটি Application Number / Receipt দেখাবে এবং SMS/ইমেলে পাঠাবে।
অতি গুরুত্বপূর্ণ: সেই Application/Receipt number সংরক্ষণ করুন — ভবিষ্যতে স্ট্যাটাস দেখাতে বা অভিযোগ করলে লাগবে। স্ক্রিনশট নিন এবং PDF ডাউনলোড করে রাখুন।
Step 7 — Verification & DBT (ভেরিফিকেশন ও ভাতা প্রসেস)
- সংশ্লিষ্ট দফতর আপনার দেওয়া নথি ভেরিফাই করবে।
- যদি নথিতে সমস্যা না থাকে, আবেদন মঞ্জুর করা হবে।
- মঞ্জুরির পরে DBT (Direct Benefit Transfer) মাধ্যমে আপনার দেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মাসিক ₹৫,০০০ পাঠানো হবে — সাধারণত পরের মাস থেকে শুরু হতে পারে।
Troubleshooting (সমস্যা হলে কি করবেন)
- ওয়েবসাইট লোড না হলে: ব্রাউজারের ক্যাশ ক্লিয়ার করে বা ভিন্ন ব্রাউজার/ডিভাইসে চেষ্টা করুন।
- ফাইল আপলোড সমস্যা হলে: ফাইল কম্প্রেস করে ছোট সাইজ ব্যবহার করুন, আবার চেষ্টা করুন।
- যদি OTP না আসে: নেটওয়ার্ক চেক করুন বা রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঠিক আছে কিনা দেখুন।
- বড় সমস্যা হলে: নিবন্ধিত অফিসে বা শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড-এ যোগাযোগ করুন, রিসিপ্ট দেখিয়ে সাহায্য নিন।
Shramshree Apply Offline — স্টেপ-বাই-স্টেপ (সহজ বাংলা)
নিচে অফলাইনে শ্রমশ্রী প্রকল্পে আবেদন করার সংক্ষিপ্ত ও স্পষ্ট স্টেপ-বাই-স্টেপ নির্দেশনা দিলাম — প্রতিটি ধাপ কী করবেন এবং কোন কাগজ দরকার তা দেখুন।
Step 1: আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করুন
- যান— জেলা/উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড, “আমাদের পাড়া — আমাদের সমাধান” ক্যাম্প, বা স্থানীয় পঞ্চায়েত অফিস।
- অফিস থেকে অফিসিয়াল শ্রমশ্রী আবেদন ফর্ম নিন (যদি আগে থেকে প্রিন্ট না থাকে, তারা কাগজে ফর্ম দেবেই)।
Step 2: ফর্ম পূরণ ও নথি সংযুক্ত করুন
- ফর্মে সঠিকভাবে লিখুন: নাম, পিতা/মাতার নাম, জন্মতারিখ/বয়স, স্থায়ী ঠিকানা।
- বাধ্যতামূলক তথ্য: Aadhaar নম্বর, Voter নম্বর (যদি থাকে), ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর + IFSC, মোবাইল নম্বর।
- আগের কর্মসংস্থান সম্পর্কিত তথ্য দিন (কোন রাজ্যে, কতদিন, কাজের ধরন)।
- সংযুক্ত নথির কপি দিন (প্রয়োজন হলে মূল দেখাতে হবে):
- আধার কার্ড কপি
- ভোটার কার্ড কপি
- ব্যাংক পাসবুক/চেক কপি (অ্যাকাউন্ট হাস্য নাম-ম্যাচ চেক করুন)
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি (প্রয়োজনীয় সংখ্যক)
- পরিযায়ী শ্রমিকের পরিচয়/প্রমাণ (যদি থাকে)
- ফর্মে আপনার স্বাক্ষর ও তারিখ দিন; যদি অফিস একটি ঘোষণাপত্র চাইবে সেটাও স্বাক্ষর করে সংযুক্ত করুন।
Step 3: ফর্ম জমা দিন
- যেখান থেকে ফর্ম নিয়েছেন সেই অফিসেই পূর্ণ ফর্ম ও সব কপি জমা দিন।
- অফিসারের সামনে মূল কাগজ গুলোর সাথে মিল করা হলে অনুকূলভাবে জমা নেবে।
- জমা দেওয়ার সময় অফিসকর্মীর নাম ও সীল/স্বাক্ষর নিশ্চিত করুন।
Step 4: রিসিভ নম্বর নিন ও সংরক্ষণ করুন
- জমা দেওয়ার পর অফিস আপনার আবেদন গ্রহণের রিসিভ/রেজিপ্ট দেবে — এর উপর থাকা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি রাখুন:
- আবেদন নম্বর / রিসিভ নম্বর
- জমা দেওয়ার তারিখ
- যে অফিসে জমা দেওয়া হয়েছে (অফিস সীল)
- গ্রহণকারী অফিসারের নাম ও স্বাক্ষর (যদি থাকে)
- এই রিসিভ নম্বর রাখুন — ভবিষ্যতে আবেদন স্ট্যাটাস জানতে বা সমস্যার সমাধান করতে এই নম্বর দেখাতে হবে।
জমা দেওয়ার পরে (কি হবে)
- সংশ্লিষ্ট দপ্তর আপনার দাখিলকৃত নথি ভেরিফাই করবে।
- যদি নথি সম্পূর্ণ ও ঠিক থাকে, আবেদন অনুমোদিত হবে।
- অনুমোদিত হলে আপনার দেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে DBT (Direct Benefit Transfer) মাধ্যমে মাসিক ₹৫,০০০ ট্রান্সফার করা হবে।
- যদি কোনো নথি অসম্পূর্ণ বা সংশোধনের প্রয়োজন হয়, তারা আপনাকে যে ঠিকানায় ফর্ম জমা দিয়েছিলেন বা দেওয়া মোবাইল নম্বরে জানিয়ে দিবে — সেই অনুযায়ী সম্পূরণ করুন।
ছোট টিপস (Important)
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নাম অবশ্যই আবেদনকারীর নামের সাথে মিলবে—না হলে DBT আটকে যেতে পারে।
- মোবাইল নম্বর সঠিক ও সক্রিয় রাখুন—অফিসিং নোটিফিকেশন বা যাচাইকরণের জন্য প্রয়োজন হবে।
- সব মূল নথি নিয়ে যান; অফিস চাইলে দেখানোর জন্য মূল দরকার হতে পারে।
- জমা দেয়া রশিদ (রিসিভ) নিরাপদ স্থানে রাখুন—স্ট্যাটাস বা আপিলের জন্য এটি দেখাতে হবে।
- যদি প্রতিনিধির মাধ্যমে জমা দেন, লিখিত অনুমতি (authorization) দিন এবং প্রতিনিধির পরিচয়পত্রের কপি রাখুন।
Shramshree Form Download
সরকারি ওয়েবসাইট চালু হলে সরাসরি “Shramshree Form Download” লিংক পাওয়া যাবে। আপনি PDF আকারে ডাউনলোড করে প্রিন্ট করতে পারবেন।
Contact Details (যোগাযোগ):
- শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড অফিস – জেলার শ্রমিক কল্যাণ দপ্তর।
- আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান ক্যাম্প।
- গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস।
Conclusion
শ্রমশ্রী প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।এটি শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, বরং দক্ষতা উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষা দেবে।অনলাইনে আবেদন শুরু হলে সময়মতো আবেদন করে নিন এবং নিজের অধিকার নিশ্চিত করুন।